রাতে খাওয়ার পর প্রতিদিনের মতো কথামৃত পাঠ সমাপ্ত হলে মহারাজ হঠাৎ বললেন,আজ শেওড়াফুলীতে গিয়ে একটা জিনিস দেখে মন খারাপ হয়ে গেল। আমরা সবাই উৎসুক চোখে মহারাজের দিকে তাকালাম।মহারাজ বললেন, " একটা দোকানে দাঁড়িয়ে আছি, পাশেই একটা খাসির মাংসের দোকান। দেখছি দুটো খাসি কেটে ঝোলানো রয়েছে, আর কয়েকটা খাসিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। ওদের পায়ে ক্রমাগত মশা কামড়াচ্ছে। বেচারারা আর কি করে! একভাবে পা নাড়াচ্ছে আর এদিক, ওদিক দেখছে।একটু থেমে এরপর বললেন, কি অদ্ভুত না! এই নিরীহ প্রাণীগুলোকে একটু পরেই কি নির্মম ভাবে মারা হবে! আর ওরা শুধু সেটার জন্যই অপেক্ষা করছে। কখন মরবে!! কিন্তু ভাব, যে মানুষগুলোর চোখের সামনেই এই অসহায় প্রাণীগুলোকে হত্যা করা হবে, সেই মানুষগুলোর জিভ দিয়েই লাল গড়াচ্ছে ওদের মাংস খাবে বলে। আমরা এতটাই অমানবিক, নৃশংস। আসলে দ্যাখ্, খাসি বা মুরগী যাই বল্, ওদের মাংসের কিন্তু কোন স্বাদ নেই। না হলে তো আমরা শুধু সিদ্ধ করেই খেতে পারতাম!
আমরা শুধুমাত্র আমাদের রসনা তৃপ্তির জন্য পশুগুলোকে মেরে বিভিন্নভাবে রান্না করে খাই আর আঙুল চাটি।এর থেকে বেশি পশুত্ব আর কি হবে!!
পৃথিবীতে বোধহয় এমন কোন পশু নেই, যাদের উপর আমরা অত্যাচার করিনি, তাদের মারিনি। কিছুটা থেমে এরপর আস্তে আস্তে বললেন--সত্যি বলছি, যদি আমার ক্ষমতা থাকতো, তবে ঐ ছাগলগুলোকে আজ ছেড়ে দিয়ে আসতাম" । আমরা সবাই চুপ। ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে!!