September 04, 2022 - BY Admin

"দয়া-র অর্থ"

দুর্গাপূজার কাজ জোরকদমে চলছে। আশ্রমিকরা প্রত্যেকে নিজেদের কাজে ব্যস্ত। সামনেই রাখিপূর্ণিমা, নবাগত বাড়ি যাবে বলে ঠিক করেছে, কারণ বাড়িতে নারায়ণ পূজা হবে। এদিকে মহারাজের সাথে নবাগত চাঁদমালা তৈরিতে ব্যস্ত। 


মহারাজঃ কতদিনের জন্য যাচ্ছিস বাড়ি?


নবাগত: ৩ দিনের মতো!


মহারাজঃ এতদিন কেন? খুব কি দরকার?একটু সাবধান। কাঁচ্চা কাঁচ্চা এসেছিস্।


হঠাৎ এমন সাবধানতার বার্তা কেন? মহারাজের কথা শুনে চমকে উঠলাম। 



আবার মহারাজ বললেন: "বাড়ি যাচ্ছিস, খুব alert থাকবি। যাবি বাড়িতে... তবে এত দিনের জন্যে থাকবি না, ১-২ দিনের জন্য যাবি,long-Span না কাটানোই ভালো। বেশিদিন আশ্রম থেকে বাড়িতে মা-বাবার কাছে থাকা খুব একটা সুবিধার হবে না। ওদের emotion তোর দিকে ছুটে আসবে বার বার । তাছাড়াও বাড়িতে মা মাংস ডিম কত কি খায়াবে!"এখানে আবার ওসব নেই।

নবাগত: "না, মাংস হবে না, পূজোতে মাংস not allow।"


মহারাজ: "তাহলে খিচুড়ি ইলিশ ভাজা?!" (হাসি)


নবাগত: "মাছও হবে না।"


মহারাজ: "আচ্ছা ঠিক আছে। (হাসি)।আসল ব্যপারটা বোঝ্,কেন বলছি।এখানে মনের সাথে একটা সংগ্রাম চলে।আর ওদিকে emotional struggles থাকে। লম্বা সময় থাকলে slowly কান্নাকাটি হবে,আর আদর-আপ্যায়ন পেয়ে ও এদিকের struggle দেখে কাঁচা মন চট্ করে  মিথ্যা, সুবিধার দিকে এলিয়ে পড়তেই পারে। মনকে পাকতে বিষয় থেকে দুরে যেতে হয়। বারবার poke করলে, সে সুযোগ হয়ে ওঠে না।

সাধু সাবধান! দেখে শুনে পা ফেলতে হয়। দেহের আত্মীয়-পরিবার প্রত্যেকের কথা-দয়া-মায়া কেটে বেরিয়ে আসতে হয়।"



সাবধান হয়ে গেল নবাগত।

কিছুক্ষন চুপ....


নবাগত: "আচ্ছা মহারাজ, অধ্যাত্মে দয়ার অর্থ কি?"

মহারাজ: "So called চারপাশে যে দয়ার নমুনা দেখিস তা মোটেও দয়া নয়। একটা ভিখারী ফুটে না খেতে পেয়ে বসে আছে, আর কিছু লোক "আহা রে, আহা রে বোলে চলে যাচ্ছে, কি কষ্ট জীবনে" এসব বলছে.. এ দয়া-ই নয়। 



ধর, ক্লাস টেনের ছেলে মাধ্যমিক দেবে, সামনে math-এর exam, formula বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, তো তার অবস্থা সে ছাড়া কে বুঝবে? আর বুঝতে পারে, ঠিক তারই মতো অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া কোনো class 11-12 ছেলে!তাই তো!!


11-12 বলবে, "আমি জানি এই পরিস্থিতি কি রকম হয়- তো আয় তোকে শিখিয়ে দিচ্ছি কি ভাবে formula বুঝতে হবে,সমাধান করতে হবে।" এটা দয়া। 


যে নিজে মায়ার কঠিন পরিস্থিতি ভ্রম (না বোঝা)হিসাবে জেনেছে ও  পেড়িয়েছে,সে মাত্র অপরকে  সেই সমস্যা থেকে তুলে ধরতে পারবে।সে বলে," জানি তোমার দুঃখ মিথ্যা,তবুও মিথ্যার যন্ত্রনাও জানি।তাই তোমায় সহায়তা করব।"এটা করুণা বা দয়া।


কিন্তু যদি 9-8 -এর ছেলে 'আহা,রে' বলে ওঠে,তবে তো ওরা আহারে বলার যোগ্যই নয়, ওরা তো সেই formula মুখস্থের সমস্যাতে পড়েইনি। যে মায়াকে চেনেইনি, ছাড়েইনি,এমন কেউ দয়ালু হতেই পারে না। নিজেকে কঠিন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করে,প্রেম বশাৎ অপরকেও সেই সমস্যা থেকে তুলে ধরাই যথার্থ দয়া।"


পরিষ্কার হল দয়া-র অর্থ। সহজ ও সঠিক ভাবে দয়া-র এই উদাহরণ নিশ্চিত সকলের কাজে লাগবে।