March 16, 2022 - BY Admin

অপরিণত অবোধ শিশুকে সামলানোর চেয়ে, পরিণত অবুঝ শিশুকে সামলানো কঠিন!

অপরিণত অবোধ শিশুকে সামলানোর চেয়ে, পরিণত অবুঝ শিশুকে সামলানো কঠিন!



প্রতিদিনের ন্যায় আজও মহারাজজী উপবিষ্ট হয়েছেন তাঁর উৎসুক ভক্তদের সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে নতুন পথের দিশা দেখাতে। ভক্তরাও সকলে একত্রিত হয়েছেন তাদের নিজ নিজ প্রশ্নের সমাহার নিয়ে। প্রত্যেকেই প্রস্তুত মহারাজের সুনিপুণ বিশ্লেষণপূর্ণ সমাধান হৃদয়ঙ্গম করার জন্য।

               

         

ভক্তদের মধ্যে থেকে একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা ভক্ত তার সমস্যার কথা জানালেন----



তিনি খুবই চিন্তিত তার ৭০ বৎসর বর্ষিয়া বৃদ্ধা মা কে নিয়ে।

তিনি বললেন তার বাবা গত হয়েছেন ১০ বছর হল , কিন্তু তার মা এখনও পর্যন্ত রাত্রে স্বপ্নে তার বাবার উপস্থিতি অনুভব করেন এবং খুবই ভীত হয়ে পড়েন। এই রকম আরও মৃত মানুষের কাল্পনিক স্বপ্ন তিনি দেখতে থাকেন রাতের পর রাত। রাতের ঘুম চলে গেছে এই দু্ঃস্বপ্নের কারণে। মেয়ে মা কে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ। তিনি তার মেয়ের প্রতি খুবই অবিশ্বাসী, তার মায়ের কোন কিছুই বিশ্বাস হয় না, মেয়ে যতই মাকে ভালো রাখার চেষ্টা করুক না কেন, মায়ের সন্দেহবাতিক মন কিছুই মানতে রাজি নয়। সবকিছুর মধ্যে negative জিনিস দেখেন তিনি।



এতক্ষণ সবকিছু গভীর ভাবে শোনার পর, মহারাজী তাঁর সুমধুর কণ্ঠে, স্নেহ মিশ্রিত ভাষায় ভক্তকে বোঝাতে লাগলেন....



তিনি বললেন--  "ব্যক্তি তার নিজের বর্তমানে খুশি নয়, যে স্বপ্নগুলো দেখেছিল তা পূর্ণ হয় নি, যদিও স্বপ্ন কারোর পূর্ণ হয় না, যখন মানুষের এইরকম স্বপ্ন ভাঙে তখন সে কল্পনার বিভিন্ন জগৎ বানায়, এগুলির মধ্যে দিয়ে সে নিজেকে highlight করবার চেষ্টা করে, নিজের প্রতি অপরের attention grow করবার চেষ্টা করে। 

    


ব্যক্তির সবকিছু তে অবিশ্বাস এটাই প্রমাণ করে যে, ব্যক্তি এত দিন ধরে যে যে বিষয়গুলিকে বিশ্বাস করে এসেছে তাতে খুবই আঘাত লেগেছে, কারণ তা খুবই নীচুস্তরের এবং অলীক ছিল। এই ধরনের মানুষরা সারা জীবন ধরে আকাশকুসুম স্বপ্ন বুনে রাখে, তার ফলে তারা খুবই gross স্তরের জীবন বাঁচে এবং তারা জীবন বুঝতে পারে না ফলস্বরূপ, তারা ভুলভাল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে তিনি মেয়ের সাথে খুশি নন।"



এই পর্যন্ত মহারাজজীর বক্তব্য শুনে ভক্তটি তার মা এর বর্তমান অবস্থা তো বুঝতে পারলেন কিন্তু আবার ও তিনি বলতে শুরু করলেন তার অস্থিরতার কথা, তিনি জানালেন কিভাবে তাকে প্রতি মুহূর্তে তার মা এর সাথে ছোট ছোট লড়াই এর মাধ্যমে দিন যাপন করতে হয়---

     

 


এইবার মহারাজী একটু গুরুগম্ভীর ভাবে অথচ তাঁর স্বভাবচিত শান্ত স্বরে বলতে লাগলেন---  "লড়াই না করে ছেড়ে দিন না, ওনার যথেষ্ট বয়স হয়েছে, বয়স হলে শরীর অথর্ব হয় ঠিকই কিন্তু মন পাকা হওয়ার কথা, এক্ষেত্রে কিন্তু তা হয় নি। আমাদের শরীর ও মন দুটোই একসঙ্গে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। তা না হলেই মুশকিল হয়ে যায়। এখানে মায়ের, মেয়েকে গাইড করার কথা, কিন্তু মা এখনও সেই যোগ্যতা অর্জন করতে পারে নি, "মা "- ই এখনো শৈশবের সেই মেয়ে বেলার চড় থাপ্পর খাওয়ার পর্যায়ে রয়ে গেছেন।"



মহারাজজী ব্যাপার টিকে আরো বিশ্লেষণ করে বলতে লাগলেন---

বরাবরই মেয়েরা চোখের কাজল ও হাতের খুন্তির মত এত ছোট ছোট বিষয়ে ফেঁসে থাকে, যে তারা বুঝতে ই পারে না জীবন এত ক্ষুদ্র নয়। প্রত্যেক মেয়েকে এর থেকে উঠতে হবে। ক্ষুদ্রতায় বাঁচা ছাড়তে হবে তাদের। জীবনে একটা বড় উদ্দেশ্য আনতে হবে- যা দিয়ে অনেক টা সময় অনেক ভালো ভাবে, অনেক আনন্দে কাটানো যায়।


জীবনের শুধু মাত্র - স্বামীর জন্য রান্না করা, সন্তান লালন-পালন করা, বৃদ্ধ বাবা-মার দেখভাল করাই উদ্দেশ্য নয়, এগুলোর সাথে সাথে আরও উচ্চতর জীবন বাঁচতে হবে। 'মা কেন কথা বলল না', 'অফিস যাওয়ার সময় স্বামী কেন টাটা দিল না', এই সব ছোট খাটো সাংসারিক ইমোশনের কোন উত্তর হয় না, এগুলো থেকে বেরিয়ে next পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। তা নাহলে সারাজীবন ইমোশনের পুনরাবৃত্তি ও দুঃস্বপ্নের আতঙ্কে কাটাতে হয়। 



মহারাজজীর এইরূপ পরম শান্তি দায়ক বিবৃতি শুনে ভক্ত টি মনে প্রাণে অপার শান্তি অনুভব করলেন এবং অগ্রগামী হওয়ার পথ খুঁজে পেলেন।