March 20, 2022 - BY Admin

অহংকার নয়, আত্মশক্তি জাগাও

অহংকার নয়, আত্মশক্তি জাগাও...



প্রতিদিনের মতই কর্মব্যস্ত জীবন। ভোরবেলায় উঠে জপ-তপ, প্রার্থনা, ব্যায়াম-স্নানাদি সেরে সবে বসেছি ওয়েবসাইটের গাদাখানেক কাজ নিয়ে।

পাশে রাখা ফোনটা হঠাৎ বেজে উঠল। মোবাইল এর স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে একটি নাম 'MAHARAJ'!!!!



এত সকালে ফোন! কি হল আবার! একটু ভয়ে ভয়ে ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে গম্ভীর স্বরে এক নিঃশ্বাসে বলে যাওয়া কথাগুলি কানে ভেসে আসলো, "কি ব্যাপার মধুরিমা, তুমি নাকি আজকে পুজোয় আসছো না!"

 

একটু থতমত খেয়ে বললাম, "না মানে অনেকগুলো কাজ pending রয়ে গেছে। আপনি বলেছিলেন একবার, কাজ সেরে পুজোয়....."


কথা সম্পূর্ণ হবার আগেই....


মহারাজ: আজ থেকে তোমার একটাই কাজ, পূজায় বসা! সবার প্রথমে আসবে, সবার শেষে আশ্রমে ফিরে যাবে। এর মধ্যেই তোমায় সব কাজ ম্যানেজ করতে হবে। সেই প্রথম দিন থেকে আমি লক্ষ্য করছি, পূজা প্রার্থনার সময় এলেই তুমি পিছিয়ে যাও। ব্যক্তিগত interest-কে priority দেওয়ার অর্থই হলো চূড়ান্ত স্বার্থপরতা এবং অহংকার। যখন সবাই পুজোতে বসছে, তুমি তখন কাজ দেখিয়ে একটা side হয়ে যাবে কেন? এ কোন্ ধরনের স্বার্থপরতা!!!??? তোমাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় আমি কখনো হস্তক্ষেপ করতে চাই না। কিন্তু এরকম চলতে থাকলে ভেতরটা একেবারে কাঁচা থেকে যাবে। 'এটা ভালো লাগে না', 'ওটা পারি না'---এগুলো আবার কি! সব শিখতে হবে! কোন ভাল মন্দের জায়গা নেই এখানে। যেখানে ব্যক্তিগত interest-কে দাঁড় করাবে, সেখানেই অহংকার চড়চড় করে বাড়বে।



অহংকার তখনও মানতে পারছে না, যে সে সম্পূর্ণ ভুল! তাই একটু আবেগী হয়ে বললাম, "ঠিক আছে আমি এক্ষুনি যাচ্ছি। কিন্তু কাজ বাকি থাকবে। আমি....." 


কথা শেষ হওয়ার আগেই উল্টো দিক থেকে ফোনটা কেটে গেল। কি জানি আজ কপালে কি দুঃখ আছে!



পাঁচটা মিনিট সময় দিলাম মনকে। নিজের অবস্থা জলের মতন স্পষ্ট হয়ে গেল। দেখলাম হিসেব শতকরা ১০০ ভাগ মিলে যাচ্ছে ! পূজার প্রতি অদ্ভুত এক অনিহা ও আলস্য মনের কোন এক ফাঁকে যেন ছোট্ট একটা বাসা বেঁধে ফেলেছে। স্পষ্ট চিনতে পারলাম শত্রুকে। বুঝলাম লড়ার সময় এসেছে...

কবীর সাহেবের একটা দোঁহার কলি মনে পড়ে গেল,


গুরু কুম্ভার, শিষ্য কুম্ভ হ্যয়, গাঢ়ি গাঢ়ি কাঢ়ে চোট্।

অন্তর হাথ সাওয়ার দে, বাহার বাহে চোট্।।


বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য পূজাস্থল.....