আধ্যাত্মিক পথে এগোনার লক্ষণ...

আধ্যাত্মিক পথে এগোনার লক্ষণ

স্থান - অদ্বৈত জ্ঞান পীঠ, দিয়াড়া

তারিখ - ১৭.০২.২০২২

YouTube- এ মহারাজের video দেখে, নিজের জীবনের অস্পষ্টতা অতৃপ্তি দ্বন্দ জিজ্ঞাসা নিয়ে প্রথমবার মহারাজের চরণে গিয়েছিলাম বিজয়া দশমীর দিন। মহারাজকে সামনাসামনি দেখে, কি বলব কি না বলব কিছুই ঠিক করতে পারছিলাম না। খুব অল্প কিছু কথাই বলতে পেরেছিলাম। তারপর মহারাজ বলতে শুরু করলেন – কিছু মূল্যবান উপদেশ দিলেন। বুঝলাম- যেটুকু বলে উঠতে পেরেছি; তার চেয়ে ঢের বেশি মহারাজ আমার মন পড়ে ফেলেছেন। তারপর মহারাজকে প্রনাম করে আমি ফেরার অনুমুতি চাইলাম। এর আগে কখনো কাউকে এত প্রেম দিয়ে “আবার এরকম চলে আসবেন!” বলতে শুনিনি। তারপর থেকেই জ্ঞান পীঠে যাতায়াত, নিত্য যোগাযোগ। 

কয়েকদিন হল আমার মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। বললাম- মহারাজ আমি কি একটুও এগোতে পেরেছি? আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।

মহারাজ- preliminary যে উন্নতি, তা কিন্তু বোঝা যায়। তোমরা যারাই এখানে আসছ, আমি সবার মধ্যে একটা জিনিস খুব prominently দেখছি- প্রতিটি ব্যক্তি এগোতে চাইছে তার concept- কে বাঁ হাতে ধরে। এইভাবে কেউ পারবে না এগোতে। নিজেকে ছাড়তে ভয় সবার; ছাড়তে রাজি নয় কেউ। সবাই ভাবছে- আমি অনেক কিছু পেয়েছি, তার সঙ্গে আধ্যাত্মিকতা পেয়ে যাব। তা হবার নয়। মূলভূত  কিছু জিনিস ছেড়ে দিতেই হবে। যেটা ভুল সেটা ছাড়তে হবে – তাতে বুক ফাটবে তো ফাটবে। এগানোর মাপদন্ডও এটাই। নোঙর ফেললে কি এগানো যাবে? যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানেই থাকবো। মহারাজ বলেছেন এগিয়ে যাও। জোর জোর দাড় টানছি কিন্তু নোঙর ছাড়তে আমি রাজি নই। তোমাকে এটাই দেখতে হবে যে কোন্ পুরনো জিনিস ছাড়তে তোমার ভয় উঠছে। কোনটা as it is না থাকলে তোমার মনে হচ্ছে এটা তো চলে গেল রে বাবা! ওখানেই আটকাচ্ছ। 

কিছুটা ভেবে বললাম- মহারাজ, আমি কিন্তু আমার সব পুরনো জিনিস একই রকম রাখিনি। কত কিছুই তো ছেড়ে দিলাম।

মহারাজ- পুরনো জিনিস বলতে পুরনো ধারনা, নিজের পছন্দ নিজের অপছন্দ নিজের ভালোলাগাকে গুরুত্ব- এগুলো সবই তো পুরনো। পুরনো ব্যক্তির যা ভালোলাগা ছিল, নতুন ব্যক্তির সেই একই ভালোলাগা কি করে থাকবে? 

আমি এরকম বহু লোককে দেখেছি – নিজের কাজ নিজের গুরুত্ব তার কমছে না জীবন থেকে। সবই ঠিক আছে, কিন্তু ওটা তো করতেই হবে। আরে করতেই হবে না, বেকার- এটা মানতেই কষ্ট হয়। তখন বলবে একসাথে কি হয়? 

একটা অজানা দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাহস চাই। Calculative হবে না একেবারে।

ধরো তুমি এক stream- এ পড়াশুনা করেছ। প্রয়োজন হলে ওটা ছেড়ে যেতে হবে। ছেড়ে দেব। তো? একটা job করছি, দেখছি সেখানে ভুল আছে। ছেড়ে দেব। তো? এই guts চাই। যেটা ঠিক তার জন্য যা করার করব।

সব পিছিয়ে থাকার একটিই কারণ-পুরনো কে  ছাড়তে না পারা। পুরনো কে এতই unconsciously আমরা জড়িয়ে থাকি যে আমরা ভাবতেই পারিনা ওটাকে ছাড়ার প্রয়োজন আছে। আমরা এত মিথ্যায় ঘিরে থাকি; সত্য আমাদের কাছে খুব অজানা অচেনা ঠেকে। ভয় পাবে না; নিজেকেই খুঁজে বার করতে হবে কোথায় আটকাচ্ছে। মা শ্মশান ভালোবাসেন।