আজ রাতে বিশেষ পদ রান্না হবে অদ্বৈত জ্ঞান পীঠে। প্রস্তুতি চলছে বিকাল থেকেই - কেউ সবজি কাটছেন ,কেউ মসলা তৈরি করছেন আবার কেউ আনুষঙ্গিক আয়োজনে অতি তৎপর।
তিনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি যেন পর্যবেক্ষণ করছিলেন , তখন আমি অফিস থেকে টুকিটাকি কাজ সেরে সবে মাত্র বেরিয়েছি। ভাবলাম ১০-১৫ মিনিট যে ফাঁকা পেয়েছি তা তার সাথেই কাটানো শ্রেয়। পাশে দাঁড়ানো মাত্রই উনি বলে উঠলেন।
তিনি: লক্ষ্য করছো বিজ্ঞান কিরকম দ্রুত অগ্রগতি করছে! বর্তমান ডেটা বলছে কিছুদিন পর হয়তো বাড়িতে একটা রোবট থাকলেই বাড়ির কাজ যা সাধারণত আমাদের মেয়েরা করে, তা অনায়াসে এবং আরো নিখুঁতভাবে করে দেবে। একবার ভেবে দেখেছো যারা এইসব কড়াইশুঁটি ছাড়ানো , কাপড় কাচা - বাসন মাজা, আর রান্না করাকে জীবন বলে ভেবে নেয় তাদের অবস্থা তখন কি হবে! সংখ্যাটা নেহাৎ কম নয় , সমাজের অর্ধেকের বেশি মেয়ে এই অবস্থার মধ্যে কাটাচ্ছে।
আমি : যখন আমি সিভিল সার্ভিসের preparation নিচ্ছিলাম তখন ডেটা বলছিল যে ওয়ার্ল্ডের যারা developed country তারা already এর মধ্য দিয়ে যেতে শুরু করেছে, ভারত যেহেতু developing country তাই আসতে একটু দেরি হচ্ছে।
তিনি: আবার একটা বৃহৎ অংশের মেয়েরা মনে করেন যৌনতা ও রূপ যেন বিয়ের একমাত্র ভিত্তি! ভেবে দেখো বিজ্ঞানের দৌলতে আজ বাজারে sex doll পর্যন্ত বেরিয়ে গেছে যা মানুষের যৌন তৃষ্ণা মেটাতে সক্ষম, আর রূপকে মেয়েরা যতদিন encash করবে ততদিন তো এসব ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মত ঘৃণ্য ঘটনাগুলি ঘটতেই থাকবে। তাহলে মেয়েদের চেতনা ছাড়া আর কি রইলো !
আমি: বিজ্ঞান তো অগ্রগতি করবেই কিন্তু আমাদের মেয়েদের বোঝা উচিত যে এই কাজগুলি করা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য নয়,জীবনের উদ্দেশ্য তো অন্যকিছু।
তিনি : দেখো প্রণাম বলো, ধ্যান-জপ বলো, গৃহস্থলীর কাজকর্ম বা পড়াশোনা করা বলো সবই হয়তো রোবট মানুষের থেকে খুব precisely করে দিতে সক্ষম হবে কিন্তু প্রণামের ভেতরে যে শ্রদ্ধা, ধ্যান - জপের মধ্যে যে ভক্তি, সবজি কাটা বা পড়াশোনার মধ্যে যে একাগ্রতা এবং নতুন খোঁজের প্রতিনিয়ত যে চেষ্টা, তা কোথা থেকে পাবে? আবার এটাও ঠিক যে প্রকৃতি তার খেলা কিন্তু থামাবে না রোবট যে সর্বেসর্বা হয়ে উঠবে এমনটাও কিন্তু নয় , তা বলে এখন জীবন্ত মানুষগুলো Robot হয়ে যাবে কেন?
আমার কাছে কোন উত্তর নেই। কিন্তু পরা - অপরাবিদ্যার অপূর্ব সমন্বয়ের আভাস পেলাম ।