October 11, 2022 - BY Admin

আমি দাস হতে রাজি নই

একদিন দুপুরে বাইরে থেকে মহারাজ এর রুমে ঢুকে দেখি মহারাজ এবংএক  আশ্রমিকের মধ্যে কোনো বিষয়ে বেশ তীব্র আলোচনা চলছে। আমি রুম থেকে বেরিয়ে যাই। কিছুক্ষণ পর দেখি মহারাজ ফোন হাতে বসে আছেন।


আমি জিজ্ঞাসা করলাম- কি কথা হচ্ছিল?


মহারাজ- সন্ন্যাস আর Bachelor জীবনযাপন নিয়ে। কিছুক্ষণ এই প্রসঙ্গে আলোচনা হওয়ার পর নিরামিষ আর আমিষ খাওয়ার কথা পড়ল।

আমি মহারাজকে জিজ্ঞাসা করলাম- মহারাজ আপনি আপনার এক পরিচিতের কথা বলছিলেন যিনি কিনা পাঁঠা বলি দেখে মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তীব্র শরীর বোধ থেকে সে এই ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু মহারাজ আমার মনে হয় আপনি যেই জায়গা থেকে প্রাণীকে হত্যা করতে বারণ করছেন তাও সেই শরীর বোধ থেকেই আসছে। কারণ আমার মনে হয় আপনি মনে করেন আমাদের মধ্যেও প্রাণ আছে আর তাদের মধ্যেও, তাই আমাদের কোনো অধিকার  নেই তাদের হত্যা করার।


মহারাজ- না রে শুধু তাই নয়, এতে আমারও কিছু লাভ হয়। কারণ যখন তুই মাছ খাস কিংবা কোনো প্রাণীকে হত্যা করিস তখন তুই আর তুই থাকিস না, তোর ভিতর একটা পশু কাজ করে। তুই দেখ না, অহিংসভাবে কি তুই কারও হত্যা করাতে পারবি? কিন্তু কৃষ্ণ পারেন। কুরুক্ষেত্রের কত হত্যার পিছনে কৃষ্ণ ছিল ভাব তো! তাহলে তো কৃষ্ণ আমার চেয়ে বেশি  Brutal। কৃষ্ণ যখন দুর্যোধনকে বেআইনি ভাবে হত্যা করেন, এতেও কৃষ্ণের গভীর প্রেম লুকিয়ে থাকে, কারণ দুর্যোধনের জন্য মৃত্যুই শ্রেয়। বুঝলি?  এটা গেল একটা দিক, এবার ভাব খাসির মাংসের গন্ধ পেলে তোর জিভে  জল চলে আসে কিনা? তোর মন চলে যায় কিনা ওই গন্ধে সে যতই কাজ থাকুক? যখন পাতে পড়ে তখন এক মনে খেতে থাকিস কিনা? পুরো মন চলে যায় কিনা ওই খাবারের দিকে? সব থেকে বড় কথা তখন তুই দাস হয়ে যাস ওই খাবারের। আর আমি নিজের সাথে এই ছবি মেনে নিতে রাজি নই। যেদিন এমন অবস্থা হবে যখন আর গন্ধে জিভে জল আসবে না, যেদিন শাকের ঝোল আর খাসির মাংস আমার জন্য এক মনে হবে সেদিন থেকে হয়তো আর এই সংযমের দরকার পড়বে না।