জ্ঞানপীঠে নিয়ম আপডেট হতেই থাকে।যখনই নিয়ম যান্ত্রিক হয়ে যায় নতুন বিপরীত কিছু সামনে আনা হয়। কিছুতেই যেন দাঁড়াতে দেওয়া হয় না। তাই, নতুন নিয়ম হয়েছে, আশ্রমের সবার সাথেই মহারাজ দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ই আমাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন, যখন-তখন নয়। সবাই মিলে সময়টা ঠিক করা হল সকাল ১১ টা। কারোর কোন সমস্যা থাকুক আর না থাকুক মহারাজ ওই সময় গিয়ে ১ ঘণ্টার জন্য বসবেন।
তো একদিন, মহারাজ বসে আমাদের ডেকে পাঠালেন, আমাদের অর্থাৎ, আমায় আর অর্ণবকে। অর্ণব আশ্রমের Secretary তাই তার থাকা প্রয়োজন। দেখলাম মহারাজ Chair-এ বসে আছেন। আর বসে রুটি-চচ্চড়ি খাচ্ছেন।
মহারাজ: বস্, কিছু কথা বলি শোন, তোদের অনেকবার বলেছি, আবার বলছি, সরস্বতী পুজোয় অনেক জোগাড়, মাথা খাটিয়ে কাজ করাতে হবে। তার জন্য Alert হয়ে চারদিকে নজর রাখতে হবে। এর জন্য প্রেম দরকার, প্রেম না হলে কখনও এই ধরনের কাজ হতে পারে না। Even কোনোও কাজ করতে পারবি না।
অর্ণব: দেখুন মহারাজ, সবাই তো নতুন, কেউ কোনোদিন এইসব কাজ করেনি। সবাই চেষ্টা করছে।
মহারাজ: তোরা বুঝতেই পারছিস না,আমি কি বলতে চাইছি। যদি সদিচ্ছা থাকে, কোথা থেকে help আসবে বুঝতেও পারবি না। ভয়ে ভয়ে করতে হবে বলে,বেজার ভাবে এই কাজ কেন, কোন কাজই হবে না। আমি তো Robot বানাতে চাই না, যে চাবুকের ভয়ে সবাই কাজ করবে!!একি অন্ন-বস্ত্রের জোগানপর জীবন নাকি?
৯৯% আশ্রমে এই চলে, আমি তো জ্ঞানপীঠ এই জন্য বানাইনি যে, কেউ আসবে আর কাজ করে যাবে কিছু না বুঝেই। দুইভাবে কাজ হতে পারে, এক প্রেমে, আর নয়তো চাবুকের ভয়ে। আমি সবসময় চেয়েছি, যাতে এরা প্রেমে কাজ করে।আর কেউ অন্তর থেকে কিছু করতে চাইছে না, তাকে তবুও জোর করে কাজ করতে বলা তো চরম অপ্রেম। আর এইসব পূজা-অনুষ্ঠান তো লোক দেখানোর জন্য নয়, কিছু একটা বোঝানোর জন্য। আর যারা বাবা-মা, পরিবার, চাকরি ছেড়ে সম্পূর্ণ জীবনটাই দিতে এসেছে তারা কিনা কাজ করবে অন্যের কথাতে? এ দেখলে আমার মনে হয় এ আর চাকরির থেকে আলাদা হলো কোথায় ?
আর আমার বিশ্বাস, কি বলতে চাইছি তোরা তা বুঝতে পারছিস।যদি প্রেমে হলো তো হবে , নাহলে নিয়মে বেঁধে frustrated কিছু বকধার্মিক পল্টন আমি বানাতে পারব না।আমারই জোর করে কিছু হয়নি। তোদের জোর করি কিভাবে? না হয় বোধ অথবা জগৎ , মাঝে কিছু নেই।
গভীর চিন্তায় ডুবে গেলাম।আমাদের ভাবানোই যেন ওনার কাজ।