December 21, 2023 - BY Admin

কামের উচ্চগতি

বাগানে ঘুরতে ফিরতে মহারাজের সাথে কথা বলতে বলতে, হঠাৎ বললাম আপনি হস্তমৈথুন সম্পর্কে যে কথাটা বলেন আমি সেটা ঠিক মানতে পারছি না। 

মহারাজ বললেন ,"কেন আমি কি বলেছিলাম?"

 আমি বললাম, "আপনি যে বলেন হস্তমৈথুনের অভ্যাস থাকলেও কোন অসুবিধা নাই।"

আমি বললাম,"ঠাকুর তো বলেছেন যে কাম কাঞ্চন ত্যাগ না হলে  ঈশ্বর লাভ হয় না।" 

তখন মহারাজ বললেন,"হস্তমৈথুন না করলে কি কামভাব চলে যাচ্ছে?নাকি ওগুলো ভিতর থেকে আরো বেশি করে টাটকা থাকছে? ওগুলোর দিকে উল্টে বেশি করে মন যাচ্ছে নাকি?"ভেবে দ্যাখ্!



আমি বললাম," হ্যাঁ তা তো যাবেই।"


মহারাজ বললেন- তবে কেন একটা কথাকে শক্ত করে ধরে নিচ্ছিস?"ঠাকুর কি তোকে ঐ উপদেশ বলছেন? ঠাকুর কোন একজন ব্যক্তি বিশেষে এই কথা বলেছেন, কিন্তু কথাটা বইয়ের মধ্যে প্রকাশ হয়েছে বলে আমরা universal সিদ্ধান্ত হিসাবে ধরি। 

এটা এক বড় সমস্যা।আগে গুরু শিষ্য one to one কথা হতো।এখন তো youtube গুরু!আমিও তো তাই।কিন্তু,আমার সাথে থাকা আর আমাকে screen এ একজন শুনে ও সামনে দেখে হয়তো মেলাতে পারবে না।



শোন্!

গুরুর উপদেশ বা কারোর কোনও কথাই universal হয় না।

 দেখ্ না রাজা মহারাজকে ঠাকুর বিবাহ করিয়েছেন। রাজা মহারাজ তো ঠাকুরের মানসপুত্র। তার আবার সন্তানও হয়েছে। এটাকে তোর হস্তমৈথুনের সমকক্ষ ধরে নে। কিন্তু, নরেন যখন বিয়ে করবে না বলেছে, ঠাকুর তখনও আবার খুব খুশি! তাহলে তুই কি বলবি? 



ঠাকুর বিয়ের পক্ষে অথবা বিরোধে? এগুলো ব্যক্তিবিশেষে এক একজনের এক-একরকম journey থাকে।  ঠিক বা ভুল কিছু  নয়। যাকে যেভাবে  সত্যের পথে আসতে হয়।কাউকে চাকরি ছেড়ে আসতে হয়।আবার কাউকে চাকরি শুরু করতে হতে পারে।


 আমি আবার বললাম,"হয়তো বাসে কোন স্ত্রী লোক উঠেছেন,আমি চাই যে, ওদিকে না দেখতে বা মন যেন ওদিকে না যায়, কিন্তু মন বারবার ঐ দিকেই যাচ্ছে।


 মহারাজ বললেন," যত মন থেকে চাইবি যে ওই দিকে মন না যায়, ঘুরে ফিরে ওই দিকেই মন যাবে।  কোন জিনিসকে আমরা যত না বলবো,তত মন ওই দিকেই যাবে।কারণ, হ্যাঁ-না দিয়েই মন রচিত।



আরে,"মন যাক না তাতে কি আছে,"এছাড়াও আমার হাজার একটা জিনিস আছে জীবনকে সুন্দর করার জন্য।  মানুষ কি একটা জিনিস নিয়ে কি বেঁচে থাকা চলে? আর এই অভ্যাস  থাকলে থাকবে।এই কাজে মাত্র ১০ মিনিট হয়তো সময় গেল, চলো বাদ বাকি কত সময়, সেটা সৃজনাত্মকভাবে নিজের energy utilise করার কাজে লাগাই।"- এমন ভাব নিয়ে এগা না!!মনে রাখ্- এমন ভাব আনবি না যে,"এমন করলে ঐ অভ্যাস চলে যাবে।ওটা পরোক্ষভাবে নিজেকে ঠকানোই হলো। Accept কর নিজেকে।এটাই কর্মফল ত্যাগ।


যার হয়তো এসবের অভ্যাস নাই, মন থেকে চেপে বিরোধ করছে, কিন্তু,সে হয়তো ২৪ ঘন্টা এই জিনিসটাকে নিয়ে ভাবছে। জ্ঞানী কামকে উচ্চ গতি দেয়।  যে এভাবে চেপে রাখে, দেখা যাবে যে বৃদ্ধ  বয়সকালেই খুব বেশি  যেন আবেগ বেড়িয়ে বিকৃতি ঘটাচ্ছে। সে হয়তো এসব তখন  গিয়ে আরম্ভ করেছে।  তাই, কারো অভ্যাস যে  চলে যাবে কিংবা স্ত্রীলোকের দিকে মন যাবে না—এগুলো যত ভাবা হবে ততই ওগুলো বেশি বেশি করে মন ভাবতে থাকে।তার মানে আমরা interest ওদিকেই দিয়ে রেখেছি।জীবনের কেন্দ্রে ঐ একটা বিষয়কে বসিয়ে রাজা বানিয়ে রেখেছি।এটাই তো মায়ার খেলা রে!!ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তোকে সেইদিকেই আনবে,যে দিকে মনে দ্বন্দ্ব বেঁচে থাকতে পারে।


তাই,যা আছে তোর মধ্যে। তাকে সহজভাবে দ্যাখ্। লড়াই করিস না।তার সাথে বাকি যে বিরাট জীবনের সম্ভাবনা আছে,সেগুলোর বিকাশ কর।কেউ তোকে অযোগ্য বলছে,এর জবাব দেওয়ার থেকে উৎকৃষ্ট উপায় হলো,যোগ্য হয়ে যাওয়া।কামকে জবাব দিয়ে কেউ কখনো জেতেনি।তবে,কাম থাকতেও রামের নাম করে  রামময় হওয়া যেতে পারে।আর হয়তো সেটাই কামের যথার্থ জবাব।