ভোরবেলা। সময় ৫. ৩০ মিঃ হবে।ওষুধ খাওয়াতে গেছি। তখন যেন সাধারণ সময়ের মতোই একই প্রানবন্ততা। আধ্যাত্মিক বিষয় হলে জ্ঞান পীঠের কোনও আলস্য নেই।
গুরুর কথা বলতে বলতে বললেন,শহরে দুধওয়ালা দুধ দেয় কিভাবে তা দেখেছিস তো? বাড়ি বাড়ি শুধু packet গুলো দিয়ে দেয়, এবার ক্রেতার ব্যাপার সে ঐ দুধ দিয়ে কি করবে না করবে।
অন্যদিকে এক অচেনা ব্যক্তি তোর রান্নাঘরে দুধের প্যাকেট নিয়ে সরাসরি ঢুকে পড়লেন, জানে না কোথায় চিনি, কোথায় চাল, ডাল ইত্যাদি। আদৌ গ্যাস সিলিন্ডার আছে কি না। তা সত্ত্বেও তার এত প্রেম যে সে পায়েস বানিয়ে তোকে দেবেই। এই দুটো দিকই সঠিক।
আমি- আপনার ভাব কোনটা?
তিনি বললেন "আমি দ্বিতীয় প্রকার" কিন্তু এটা সবার জন্য নয়। আমি আসলে বহুরূপী টাইপের। তবে রমণ মহর্ষির মত অন্যান্য অনেক গুরু আছেন যাদের ভাব প্রথমটার মত। ভাববি না যে তাদের ভালোবাসা কম!নিজের জীবনের বোধ ও সামনের ব্যক্তির যোগ্যতাভিত্তিক তারা আচরণ করেন।
আমি :- না! ভাবার তো কোন কারণই নেই।
তিনি :- আসলে কি বলতো আমাদের মনের কাছে এরকম কথা পড়লেই চট্ করে তুলনা করে উঁচু-নীচু বানিয়ে ফেলে, প্রথমভাবের ব্যক্তিরাও তোকে কত স্বাধীনতা দিচ্ছে। তুই পায়েস না বানিয়ে দই বানাতেও পারিস। অন্যদিকে, দ্বিতীয়ভাবের ব্যক্তি কেন পায়েস বানাতে তৎপর?
কারণ,সে তোর সাথে এত প্রেমে আছে যে, তিনি জানেন এই মুহূর্তে তোর পায়েসই একমাত্র প্রয়োজন এবং তুই তা বানাতে চেষ্টা করলেও বানিয়ে উঠতে পারছিস না।তবে,শিষ্যের অতটা আন্তরিকতা থাকলে তবে হয়!
ঠাকুরের ভাব অনেকটা এরকম ছিল। তিনি ১৬ জনের জন্য পায়েস বানিয়েছিলেন। আর মা ঐ প্রথম ভাবের অর্থাৎ দুধ বিতরণ করেছিলেন। হ্যাঁ ! এটাও কিন্তু ঠিক যে , গুরু তোকে পায়েস বানিয়ে দেন অবশ্যই কিন্তু খাবি কি না সেটা তোর উপরে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত সাধকেরই।
এর জন্যই গুরু spontaneous কর্মফলে হাত দেন না, দিলেই ব্যক্তি তখন যন্ত্রের মতো হয়ে পড়ে।গুরু একমাত্র তোকে সহায়তা করতে পারেন।কিন্তু,পথের খোঁজ ও পথ তো তোকেই চলতে হবে।