May 31, 2022 - BY Admin

গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু গুরুদেব মহেশ্বর৷ গুরু রেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ ।।

গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু গুরুদেব মহেশ্বর৷ গুরু রেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ ।।



আজকের ঘটনা অতি সংক্ষিপ্ত। কিন্তু এর গভীরতার তল অতল পাওয়া ভার।


বসে আছি, বাইরের ঘরের সোফাটায়। মোবাইলে খুটখাট্ চলছে। তখন দুপুর ১২ টা প্রায় বাজতে চলেছে। মহারাজ তাঁর ঘরে কাজ সেরে বেড়িয়েছেন, বাইরে একটু হাঁটা চলা করতে। বেড়তে বেড়তে হটাৎ তিনি আমার কাছে এসে থামলেন। কয়েকটি কথা বললেন আমায়। কি বললেন তা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়, তাই তার বিবরণ আজ থাক্। কিন্তু কথাগুলো শুনতে শুনতে আমি লক্ষ্য করলাম অনিদ্রা জনিত পুরু কালিমা তাঁর দুই চোখের কোল জুড়ে তার গভীর ছাপ ফেলে গেছে। 


ভালো লাগল না দেখে! সবেমাত্র কিছু দিন হল এখানে এসেছি, তার মধ্যেই দেখছি এই দ্রুত পরিবর্তন। তাই মুখ ফস্কে বলেই ফেললাম, মহারাজ আপনার চোখের কোল দুটোয় ডার্ক সার্কেল পরে যাচ্ছে তো দিন দিন। ঘুম কম হচ্ছে বোধহয়! একটু খেয়াল রাখুন নিজের।


আমার কথা শুনে তিনি বললেন, আরে ওটা আমার বিজয় তিলক! 



বি-জ-য়-তি-ল-ক!!!


লোকটা বলে কী? আমি থ হয়ে শুনছি আর মহারাজ তাঁর কথার রেশ টেনে বলেই চলেছেন, আজকাল কম বেশি সব লোকেরই ডার্ক সার্কেল দেখা যায়। কারুর ডিপ্রেশনে রাতে ঘুমের ঠিক নেই, কেউ আবার সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাক্টিভ থেকে থেকে চোখের নিচে কালি ফেলে দিয়েছে!


প্রত্যেকেরই এই ডার্ক সার্কেল-এর পেছনে রয়েছে, নিজেকে নিয়ে ভাবা কোন গল্প। কিন্তু আমি রাত জাগি, যাতে কারুর চোখে একটু শান্তির ঘুম আসতে পারে রাতে। এতে আমার নিজেকে নিয়ে ভাববার কোন জায়গাই নেই। এটা কি কম বড়ো পাওয়া, যে আমি তাঁর কৃপায় এমন একটা কাজের সুযোগ পেয়েছি।


এবার এর জন্য চোখের তলায় একটু কালিই নয় পড়ল! তা নিয়ে এতো ভাবতে যাবো কেন আমি। এ তো আমার পরম পাওয়া, আমার পরম সৌভাগ্য, আমার বিজয় তিলক। ডার্ক সার্কেল তো অনেকের পড়ছে, কিন্তু অন্যের জন্য কাজ করতে গিয়ে ডার্ক সার্কেল পড়ছে, এমন ক'টা লোক আছে, আমায় গুনে দেখাও তো দেখি।


আমি চুপ! একটা নতুন ইক্যুয়েশন্ শিখলাম জীবনের। কথা বলবো, তার ভাষাই যেন হারিয়ে ফেলেছি তখন। 


এভাবেও ভাবা যায়!!!

যায় হয়তো.. তাই জন্যই এক মাত্র গুরুকেই শাস্ত্রে স্বয়ং ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশের সমকক্ষ বলা হয়েছে, পরম ব্রহ্মের স্থান দেওয়া হয়েছে। ঠিক যেমন প্রজাপতির বিনিদ্র রাত্রির কাটে সৃষ্টির অবিচল কার্যে, জগত পালক যেমন বারবার ধরাধামে অবতরিত হন এই সৃষ্টি রক্ষা হেতু, দেবাদিদেব যেমন হাসতে হাসতে হলাহল পান করে নীলকন্ঠ হন সেই সৃষ্টিরই সন্তুলন রক্ষার্থে, গুরুও যেন তেমনই তাঁদেরই রূপ হয়ে অবিরাম এগিয়ে নিয়ে চলেছেন এই অনাদি কার্যকে। তাঁর জীবন যেন কেবল অন্যেরই হিত সাধনের ফসল। বহুজন হিতায়, বহুজন সুখায় জন্মা এমন গুরুদেবকে তাই আমার শত কোটি নমন।


অখন্ড মন্ডলা কারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম। তদপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।। অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন শলাকয়া৷ চক্ষুরুন্মিলিত যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ ॥গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু গুরুদেব মহেশ্বর৷ গুরুরেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ ।।