অদ্বৈত জ্ঞানপীঠের প্রতিটি পূজানুষ্ঠানে বহু মানুষ তাদের সাহায্যের হাত বিভিন্নভাবে (আর্থিক অনুদান, স্বেচ্ছাসেবক, পূজার প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দিয়ে, ইত্যাদি ) বাড়িয়ে দিয়েছে ঠাকুরের সেবার কাজে। এদের মধ্যে একজন, স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে ঠাকুরের সেবা করতে কালীপূজার অনুষ্ঠানে এসেছিল। কিন্তু ঠাকুরের সেবা, আশ্রমের কাজ করে এত ভালো লেগে গিয়েছিল যে সে Decision নেয় যে/ জগদ্ধাত্রী পূজা কাটিয়ে বাড়ি যাবে। জগদ্ধাত্রী পূজার পরে একদিন আশ্রমের বাইরের পাশের জমিটায়, দুই ব্রহ্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবক দাঁড়িয়ে কথা বলছেন নানা বিষয় নিয়ে। হঠাৎ মহারাজ এসে উপস্থিত।
মহারাজ: কি উৎপল ভবিষ্যত নিয়ে কি পরিকল্পনা আছে?
স্বেচ্ছাসেবক: হ্যাঁ মহারাজ, পড়াশোনা শেষ করেছি। এইবার সরকারি চাকরির Preparation নিচ্ছি।
মহারাজ: কোন্ চাকরির জন্য পড়াশোনা করছো?
স্বেচ্ছাসেবক:- মহারাজ পুলিশের চাকরি আমার সবথেকে বেশি ভালো লাগে। ইচ্ছা আছে পুলিশ হওয়ার।
মহারাজ:- কেন? পুলিশের চাকরি ভালো লাগে কেন?
স্বেচ্ছাসেবক: মহারাজ, পুলিশ হলে আমি সমাজের খারাপ কাজগুলোকে বন্ধ করতে পারব এবং সমাজসেবা করতে পারব। তাছাড়া পুলিশের ওই খাকি ড্রেসটা আমার খুব পছন্দের।
মহারাজ: যদি পুলিশের চাকরি না হয়?
স্বেচ্ছাসেবক: তাহলেও কোনো অসুবিধা নেই, যাই হোক কিছু একটা করে নেব।
মহারাজ: পুলিশ হয়ে তুই ভাবছিস, তোর হাতে পাওয়ার আসবে, সমাজসেবা করবি,I কিন্তু ultimate তুই কারো দাসত্ব-ই করবি। যে কাজটা তোর ভুল মনে হবে, সেটাই তোকে দিয়ে করাবে। তুই কাজটা ভুল জেনেও, কিছু করতে পারবি না কারণ তুই কারো Under-এ কাজ করছিস। তোর Senior-এর কথা যদি অমান্য করিস তাহলে তোর চাকরি যাবে।
তথ্য দেখ -আজ যারা পুলিশ, তারাও একদিন ভেবেছিল যে, তারাও দেশ সেবা করবে কিন্তু তারাও দাসত্ব করছে। না হলে এত পুলিশ সবাই "সমাজের সেবা করবো", "দেশের সেবা করবো" এই সংকল্প নিয়ে পুলিশ হয়েছে, তাহলে দেশে Crime এত বেড়ে যাচ্ছে কেন?
স্বেচ্ছাসেবক:- চুপ করে মহারাজের কথা শুনছে আর ভাবছে।
মহারাজ :- এগুলো তো গেল ঘরের বাইরের ঝামেলা। এবার ঘরের ভেতর দ্যাখ, তুই মুক্ত হয়ে কখনো বাঁচতে পারবি না, কারণ তোর একটা চাকরি পাবার পর, তোর বন্ধনের বিস্তার হতেই থাকবে (ঘর, বিয়ে, ছেলে, ইত্যাদি)।
তুই শান্ত, কর্মঠ, শক্তিশালী ছেলে। তোর মধ্যে অনেক ভালো গুণ বর্তমান। কিন্তু তোর এই সব ভালো গুণ ঘরে আর বাইরের এই যাঁতাকলে পড়ে পিষে যাবে। এই energy, এই ভালো গুণ ভুল পথে চালিত হবে। তোর এই সদ্ গুণ গুলোকে কাজে লাগিয়ে, তোকে দিয়ে উল্টোপাল্টা কাজ করিয়ে নেবে প্রকৃতি। আর তুই ভাববি as a police officer, as a son, as a husband তুই সঠিক কাজ করছিস। ইহাই মায়া।
এর ফলে তোর দুই দিকেই Loss. একদিকে তোর জীবনে অশান্তির শেষ থাকবে না আর অন্যদিকে তোর সমাজসেবা দেশ সেবাও হবে না।
বুদ্ধিমান ব্যক্তি সেই, যে তার সৎগুন গুলো কোন কৃষ্ণের কাজে সমর্পণ করে। যা প্রকৃত সঠিক কর্ম এবং যা দেশের কাজে এবং জগতের কাজে সঠিকভাবে লাগে।
এক্ষেত্রে দুদিকেই লাভ। একদিকে তার জীবন শান্তিতে, মুক্তিতে কাটে। অন্যদিকে জীবনের সমস্ত উর্জা দেশের কাজে জগতের কল্যানে সঠিকভাবে লাগে।
মহাভারতে দেখ অর্জুন এবং কর্ণ দুজনেরই কিন্তু প্রতিভা সমান সমান ছিল কিন্তু কর্ণ তার এই প্রতিভাকে কোন এক দুর্যোধনের কাছে সঁপেছিল । কিন্তু অর্জুন তার এই প্রতিভাকে কোন এক কৃষ্ণের কাছেই সমর্পণ করে দিয়েছিল। ফলাফল কি হয়েছিল? তা তো সকলেরই জানা।
মহারাজ:- এক গাল হাসি নিয়ে বলতে লাগলেন, "বোঝে -প্রাণ বোঝে যার"।