March 15, 2022 - BY Admin

দ্বৈত না অদ্বৈত কোনটা সঠিক? (তৃতীয় ভাগ)

দ্বৈত না অদ্বৈত কোনটা সঠিক?

           (তৃতীয় ভাগ)



স্থান - অদ্বৈত জ্ঞান পীঠ, দিয়াড়া

তারিখ - ১৮.০২.২০২২



মহারাজ আবার বলতে শুরু করলেন – যাহা যেরূপে হইবার তাহা বিনা প্রযত্নেই হইয়া থাকে- এটা কেন বলছে এবং কাকে address করছে এটা মাথায় রাখতে হবে। বিনা চেষ্টাতেই কার হয়?

বিনা চেষ্টায় মল, মূত্র, ঢেঁকুর এসব প্রাকৃতিক ক্রিয়াই যদি হয় তবে এই শ্লোকের অধিকারী আমরা নই। যেটা যেমন হওয়ার সেটা বিনা চেষ্টাতেই হয়ে থাকে – এটা শুধু কোন চেষ্টারোহিত ব্যক্তির সত্য; যে চেষ্টা করে করে থেমে গিয়েছে। কিন্তু যে সঠিক চেষ্টা করেইনি তার জন্যে এটা খতরনাগ। এই জন্য গুরুর কাছে আসলেই প্রথমে বলে এটা করো ওটা করো কর্ম করো। তুরীয়ানন্দজী বলতেন যত সাধনা পাখির ডানা ব্যথার জন্য। পাখি চারিদিকে উড়ে দেখবে কোথাও কিছু নেই; তখন সে মাস্তুলে গিয়ে বসবে। এই মাস্তুলে বসা পাখির জন্য এটা সত্য। সেই বলতে পারে বিনা চেষ্টাতেই যা হওয়ার হয়।  

নির্বুদ্ধিতা আর বুদ্ধির পারে – এই দুটো জিনিস এক নয়। 



একটা কথা মাথায় রাখবে – এই যত বই লেখা হয়েছে including উপনিষদ্, কোথাও absolute truth বলা হয়নি। যখনই আমি কথা বলছি, সব সময় সাপেক্ষ কথা বলছি। এর জন্য কোন একটি prescription হতে পারে না।  



এবার একজন ব্রহ্মচারী প্রশ্ন করলেন – মহারাজ, তার মানে এটা বোঝাতে চাইছে যে তুমি কর্ম করো কিন্তু ফলে তোমার অধিকার নেই?    



মহারাজ – তুমি পরীক্ষা দিচ্ছ, ফল কি হবে তুমি থোড়াই জানো? কর্ম তখনই তুমি ফল না চেয়ে করতে পারবে যখন তুমি ঠিক কাজ করছ। সঠিক কাজ সবসময় itself তোমাকে ফল দিয়ে চলে যাবে। তুমি যদি বৈরাগ্যশতকমের একটা course করো আর তোমাকে বলা হয় যে এটা করলে তুমি একটা certificate পাবে, তাহলে তোমার অর্ধেক মন এই শ্লোকে থাকবে আর অর্ধেক ওই certificate-এ চলে যাবে। এখানে কর্তার নিস্কামতার কথা বলা হচ্ছে; কর্ম নিস্কাম হয় না। তুমি যখন নিস্কাম কর্তা তখনও তুমি বাজারে গিয়ে টাকা দেবে এবং মাছ নেবে। এতে কোন ভেদ হবে না। আমি তো নিস্কাম কর্তা, তো মাছ নিই কি মাছ নিই না, টাকা দিই কি দিই না – এসব পাগলামি! এগুলোকেই লোকে ধর্ম বলেছে। ধর্ম নাকি বলে যার কিছুতে আঁট নেই। আরে বাবা যে পুরুষ – প্রকৃতির ভেদ লাগাচ্ছে তার কিছুতে আঁট নেই!! ঠাকুর বলছে – সমাধির সময় আমার কাপড় খুলে যায় তবু আমি তোদের মতো অতদূর নই। নিস্কর্মতা আর পরম সমাধি এক কথা নয়। এই জন্য আমি কখনো কখনো বলি – সত্ত্বগুন আর তমোগুন অনেক সময় একই রকম দেখায়। শিশু ঘুমায় আর বৃদ্ধ ঘুমায় – এই দুটো একই রকম লাগে। কিন্তু দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। শিশু full energy নিয়ে ঘুমাচ্ছে, আর বৃদ্ধ ক্লান্তিতে ঘুমাচ্ছে।  



একদম যদি ultimate truth বলা হয় – সময় তো নেই। যদি সময় বলে কিছু থাকে শুধু এই সময় আছে। এই সময় পূর্ণতায় বাঁচো। কেউ জানেনা এই পরের মুহূর্তে কি হয়ে যাবে। তুমি যদি এই সময়টা ভুল ভ্রান্তিতে কাটিয়ে দিলে, পরে হাহুতাশ করাটা mandatory হয়ে যাবে। তুমি continue পূর্ণত্বের একটা শৃঙ্খলা বেঁচে চলে যাও। যেখানেই বন্ধন আসল সেখানেই মুক্তি মুক্তি করতে করতে চলে যাও। এটাই জীবন। মানুষ দেহ পেয়ে গেছ, অভিশাপ পেয়ে গেছ – বন্ধন। হাত একটা নির্দিষ্ট দূর অব্দিই যেতে পারবে, কোন গরম জিনিস তুমি হাতে করে ছুঁতে পারবে না। দেহ পাওয়ার সাথে সাথে এই limitations গুলো পেয়ে গেছ। এর অন্যথা হবে না। ভদ্রলোকের মতো এগুলো স্বীকার কর মুক্ত হতে হতে এগাও। বন্ধন যত কাটবে তত এই মুহূর্তেই কর্মের ফল পেয়ে যাবে। আর যখনই বন্ধনকে না বলতে পারবে না, তখনই ভিতরে একটা খচখচানি থেকে যাবে। 

তুমি অতীত তখনই ভুলতে পারবে যখন বর্তমানে তোমার খেদ নেই। এমন কর্ম করতে হবে যাতে এই মুহূর্তে পূর্ণতায় বাঁচতে পারো এবং দায়িত্ব নিয়ে বলছি – জ্ঞান ছাড়া পূর্ণতা আসতে পারেনা। 



এই যে তোমরা এখানে বসে আছ কালকের bank balance-এর চিন্তা না করে, তাই প্রকৃতি এই মুহূর্তে তমাদের মজা মারতে allow করে দিয়েছে। যেই মুহূর্তে মাথায় চিন্তা ঢুকবে আমার কাল কি হবে? হাতের সামনে chow mein থাকবে, পেটে আর খিদে থাকবে না। বলবে ভালো লাগছে না।