September 21, 2023 - BY Admin

ধর্মের পরিভাষা

ক্লাস recording চলছিল। আমি মহারাজকে জিজ্ঞাসা করলাম -  "দুর্যোধন যে যুক্তি দিয়েছিল, সেটা তো সঠিক ছিল -- কেন যুধিষ্ঠির তার স্ত্রীকে বাজি রেখেছিল ?"


   মহারাজ: -- অবশ্যই! এর জন্য যুধিষ্ঠিরকে প্রথমে নরক দেখতে হয়েছিল তারপর স্বর্গ। ভাবো সত্যের ধ্বজাধারী, ধর্মজ্ঞ ব্যক্তির অবস্থা!! তাকে পরিবার সমেত বনবাসে যেতে হলো, অজ্ঞাতবাস,সেখানে নানা হেনস্থা,শেষে আত্মীয়দের সাথেই যুদ্ধ-এসব গ্রহণ করতে হলো।কোন সময়ে ধর্মের প্রয়োগ কেমন হবে,তা বড় সুক্ষ্ম বিষয়।শুদ্ধ মন না হলে অনেক জ্বালা।


আমি: ঐ অবস্থাতেও তো অন্য পান্ডুপুত্ররা প্রতিবাদ করতে পারতো ?


মহারাজ: -- কি করে করবে ? স্মৃতিশাস্ত্র বলেছে বড়োদের কথার অমান্য করতে নেই। দেখো না ভীষ্মের অবস্থা!! প্রতিজ্ঞা পালন করতে গিয়ে বেচারাকে অধর্মের সঙ্গ নিতে হল। ঐ যে স্মৃতিশাস্ত্রতে কোন এক সময় বলেছে -  প্রতিজ্ঞা পালন করা উচিত!প্রজ্ঞা ছাড়া বিধিপালনও অনর্থক হয়ে যায়।


এমন সময়ে তো শ্রীকৃষ্ণ এসে সব প্রচলিত ধর্মকে challenge করলেন। ধর্মের পরিভাষা শেখালেন, সংকীর্ণতা ভাঙলেন, এইখানেই তো তার বিশেষত্ব, তাই তো তিনি অবতার।


এই কৃষ্ণ যদি পান্ডবদের সাথে ঐ দিন সভায় থাকতো তাহলে হয়তো বস্ত্রহরণ হতই না। যুধিষ্ঠির নিজের যে পাশা খেলার প্রতি দুর্বলতা, সেটার জন্য কৃষ্ণকে সভায় উপস্থিত থাকতে বারণ করেছিলেন। এটাই আমরা করে থাকি। যে মুহূর্তে,যে বিষয়ে গুরুর সামনে নিজেকে সবথেকে বেশী মেলে ধরা উচিত,সেসব ক্ষেত্রেই আমরা আস্তরণ দিয়ে দিই।আর যেখানে নিজেকে আটকানো দরকার সেখানে অঢেল কথা বলে দিই। আমাদের অবস্থাও যুধিষ্ঠিরের মতোই, সব জানি কোনটা করণীয়, কিসের বিনিময়ে কি করা উচিত কিন্তু গুলিয়ে ফেলি। যেমন যুধিষ্ঠির গুলিয়েছিলেন যে, দ্রৌপদীর স্বতন্ত্রতা ও পত্নীসত্ত্বার মধ্যে।


আমি: -- হুম্।