March 08, 2024 - BY Admin

প্রণামের মাহাত্ম্য


একদিন দুপুরবেলা মধ্যাহ্ন ভোজনের পর মহারাজ বিশ্রামে যাবেন বলে বিছানায় বসে আছেন। এমন সময় এক ব্রহ্মচারী, মহারাজের ঘরে এসে বসল এবং আশ্রমের বর্তমান পরিস্থিতি, স্বেচ্ছাসেবকদের কর্মদক্ষতা নিয়ে আলোচনা চলতে থাকলো আমাদের মধ্যে......


 তিনি :- (কিছু ভক্তের নাম উল্লেখ করে) আমি বুঝিনা এরা বার বার আমাকে এত প্রণাম করতে চায় কেন? যেখানেই দেখা হবে, সেখানেই প্রণাম‌। কি হবে এতবার প্রণাম করে?


      ব্র:- মহারাজ, কি বলছেন !!আপনাকে গুরুর দৃষ্টিতে দেখে তাই প্রনাম করতে চায়।


তিনি:- গুরুর চোখে দেখুক আর গরুর চোখেই দেখুক, প্রণাম করে কি হবে?এটা সবাই একটা শক্ত ছবি বানাতে চাইছে।


         প্রণাম করলে কি আত্মজ্ঞান হয়ে যাবে? প্রণাম করলে কিছু হয় না।কেউ শ্রদ্ধায় করে সেটা আলাদা কথা। তার থেকে আমি যা বলছি, তার ভাব তুমি কতটা নিতে পারলে, কতটা বুঝতে পারলে, সে বিষয়ে কতটা নিজেকে উৎসর্গ করলে, তাতে কাজের কাজ কিছু হবে, নাহলে কেউ হাজার প্রণাম করুক, কিছুই হবে না। 


      ব্র:- তাহলে কি মহারাজ ভক্ত বা শিষ্য শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য গুরুকে প্রণাম করবে না?


       তিনি:-  আমি তা বলছি না, আসল কথা হল তুমি কাকে প্রণাম করছো? আমার দেহকে (ব্যক্তিকে) নাকি আমার মধ্য দিয়ে যে গুরুতার (নৈর্ব্যক্তিক) প্রকাশ ঘটছে, সেই গুরুতাকে?- এ বিষয়ে সজাগ থাকো।যদি আমি যা বলছি, সেটা বুঝে নিজের মধ্যে কেউ ঢেলে আত্মস্থ করতে পারে, নিজে ভরে যেতে পারে, তাহলে তাই হল আমার জন্য চরমতম শ্রদ্ধা। তাই হল গুরুদক্ষিণা। আগে এটা হোক। নাহলে প্রণাম শুধুমাত্র বাহ্যিক আচরণের বিষয় হয়ে যাবে ।


দেখো,কাউকে পূজা করা আর তাতে ডুবে নিজেকে ভুলে যাওয়া এক কথা নয়।সরস্বতীপূজা তো সব ছাত্র-ছাত্রীই করে কিন্তু সারা বছর জীবনে বিদ্যাকে সময় ও সম্মান ক-জন দেয়?কেউ প্রণাম করে শান্তি পেলে  আমার আপত্তি কিছু নেই।কিন্ত,যদি জিজ্ঞাসা করো,আমার আন্তরিক ইচ্ছা কি?- তবে বলবো,যেমন চন্দন মাখিয়ে ফুল দেওয়া হয়,তেমনি তোমার জীবন মাখিয়ে আমাকে প্রণাম করো বা না করো,তুমি আমার হৃদয়েই থাকবে।

তবে,জ্ঞান পীঠে এসে কেউ আচরণ নির্ভর হয়ে থেকে গেলে,সে আমার আফসোসের জায়গাই হবে।



     ব্র:- হু ( ঠিক মনে মনে সম্মতি প্রকাশ করলাম)।