ভ্যালেন্টাইনস ডে'র কথা...
ভক্তসঙ্গ, অদ্বৈত জ্ঞান পীঠ (স্ত্রিয়ঃ সমস্তাঃ)
স্থান : শেওড়াফুলি
তারিখ : ১৩.০২.২০২২
আজ রবিবার। আগামীকাল ভ্যালেন্টাইনস ডে। যোগবাসিষ্টসারঃ ক্লাস শেষ হতেই ভক্তদের মধ্যে থেকে মহারাজের কাছে এই দিনটি নিয়ে কিছু বলার অনুরোধ এল।
অর্ণব কাছেই বসে ছিল। মহারাজ তার দিকে তাকিয়ে বললেন, 'অর্ণব, ঋষি ভ্যালেন্টাইন সম্বন্ধে বল। কি জানিস??'
অর্ণব : (একটু ইতস্তত করে) ঋষি ভ্যালেন্টাইন একজন সমাজ সংস্কারক ছিলেন। তিনি ভারতের বৈদিক বিবাহ প্রথাকে পাশ্চাত্যে প্রচার করেছিলেন। সেই থেকে এই প্রথা চলে আসছে ও তৎকালীন এই দিনটি একটি পবিত্র দিন হিসেবে পালন করা হত। কিন্তু, এখন তা ভ্রষ্ট হয়ে গেছে।
মহারাজ : ঋষি ভ্যালেন্টাইন দেহ বোধের উর্দ্ধে চিত্তের একরস ও সমতার উদ্দেশ্যে এই প্রথা পাশ্চাত্যে নিয়ে গেলেন। আর আমরা তা আবার ভারতে নিয়ে এসে কি করলাম??
সকলে: (সহাস্যে) আমরা ওদের ভালোটা ছেড়ে দিয়ে খারাপটা নিলাম। আর ওরা আমাদের খারাপটা ছেড়ে ভালোটা নিল।
মহারাজ : ঋষি ভ্যালেন্টাইনের জীবনী মূলতঃ ত্যাগের কথা শেখায়। এটা দেখায় যে, একটি আদর্শের জন্য কিভাবে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। ঋষি ভ্যালেন্টাইন নিয়ে বিস্তারিত পড়লে আরো জানতে পারবেন। সেখানে আছে শুধু ত্যাগ, কোনো যৌনাচার নেই। আজকের রোজ ডে, কিস ডে অনেক পরে এসেছে। এগুলির মাহাত্ম্য একরকম ছিল, কিন্তু বর্তমানে পুরোটাই বাজারীকরণ হয়ে গেছে।
অর্ণব : কি মাহাত্ম্য, মহারাজ??
মহারাজ : পাশ্চাত্যে মানুষকে সম্মান জ্ঞাপনের জন্য 'কিস' এর প্রচলন ছিল। এটা আজকের লিপকিস নয়। আপনি যেমন এখানে কাউকে সম্মান জানাতে 'প্রণাম' করেন, ব্যাপারটা অনেকটা তাই। কিন্ত, আজ এই অর্থের অনর্থ ঘটে গেছে। আজকের দিনে রীতিগুলি শুধুমাত্র আচার সর্বস্বতায় পরিণত হয়েছে। বিবাহগুলিই দেখে নিন না!!
অর্ণব : (একটু লজ্জায়) এখন তো বিবাহে যা হয়, আর কি বলবো...
ততক্ষনে সবাই হো হো করে হেসে উঠল।