August 27, 2022 - BY Admin

মহারাজের মৃত্যু ভয়- (Part 1)


একদিন দেখা যাচ্ছে, সকাল সকাল  মহারাজ, আপনিই  এসেছেন, আশ্রমিকদের সকালে চা খাওয়া হচ্ছে, আর বলতে চাইছেন মুখে কিছু, কিন্তু কি যেন ভাবছেন!  জিজ্ঞাসা করা হলো, " কিছু বলবেন? কেমন যেন চিন্তিত লাগছে l"  বললেন- "মরার কথা  ভাবছি।" সবাই হেসে উঠলো। মহারাজ বললেন, " না মজা নয়। ভাবছি,  যতদিন দেহটা সবার কাজে লাগছে, আমার একটা নিজেকে বলার মতো কিছু আছে। কিন্তু যেদিন দেহটা ভাঙবে, হয়তো অকেজো হচ্ছি। না লিখতে পারছি, না বকতে,  না বলতে, না কারোর সহায়তা করতে। অথর্ব হলাম হয়তো! তখন এর ওর সহায়তা নিয়ে বেঁচে থাকা। ভয় হয়, এমন দিন যেন দেখতেও না হয়, যখন মায়ের দেওয়া দেহ তো থাকবে, অথচ মায়ের সেবায় লাগবে না। লোকে বয়সকালে ওষুধ, security নিয়ে ভাবেl আমি ভাবি, যেন, দেহটা বইতেই না হয়l জীবন উর্জ্জা যেন নিঙরে শেষ হয়ে যাই কাজ করতে করতে। লাভই বা কি? ওষুধ, ফল, সহানুভূতি নিয়ে হাসপাতালে পড়ে থেকে। না দেহটা নিজের কাজে লাগে, না অন্যের, উল্টে লজ্জাযুক্ত জীবন। কারণ-নির্ভরতাl

 আশ্রমিক-কিন্তু মহারাজ মৃত্যু তো কারোর হাতে নেই?

 মহারাজ-ঠিক কিন্তু জীবন তো আছে। যেন হাতটা তার কাজ করতে করতে এর fuel শেষই করে ফেলে l মুখ তাঁর কথা বলতে বলতে দ্রুত বাকশক্তি পুরো use করে ফেলে l দেহটা যেন পুরো প্রদীপের তেল শেষ হওয়ার মতো। কিছু নিয়ে যেতে চাই না l যা আছি এখানের। এই "আছিটা" যেন এখানে সর্বৎকৃষ্ট কাজে শেষ দিন অবধি থাকে। এই আশা আছে। ফলে বলতে পারো, ভয়ও আছে, আমি নিজেকে অমুক্ত দেখতে ভয় পাই, চাপে থাকতে, নির্ভর থাকতে মৃত্যুর মতো ভয় পাই। জীবন চলছে, অথচ অমুক্ত, নির্ভর, অন্যের মতামতে চলবো? এ আমার কাছে মৃত্যু যন্ত্রণা। তোমরা সহায়তা করো, যেন, এমন ভাবেই বসে বসে (যেমন তিনি বসে আলোচনা করছিলেন) চলে যেতে পারি।

গুনগুন করছেন, "যা মরণে সে জগ ভরে, মেরে মন আনন্দ। কহে কবীর  কবহু মরু, পাউ পুরণ পরমানন্দ।

আমরা হতবাক! নিশ্চুপ।