February 23, 2022 - BY Admin

মুখ্য কোনটি ?? অন্তরের শোধন না সমাজের শুদ্ধিকরণ

মুখ্য কোনটি ??  অন্তরের শোধন না সমাজের শুদ্ধিকরণ


স্থান: অদ্বৈত জ্ঞান পীঠ

২১.০২.২০২২



আজকের বিকাল বেশ রোদ ঝলমলে। চারিদিকে ভক্তের সমারোহ। বসার ঘরটি একেবারে গমগম করছে।

ধীরে ধীরে ভক্তের আগমনে এই ক্ষুদ্র আশ্রম যেন হয়ে উঠছে এক বৃহৎ সংসার...



ভক্তরা যে যার মতো প্রশ্ন নিয়ে আসেন এবং সঠিক উত্তর পেয়ে বাড়ি ফিরে যান।


আজও কিছু ভক্ত এসেছেন মহারাজের সাথে দেখা করতে।ওনারা প্রায়ই এখানে আসেন আশ্রমে..


একজন ভক্ত প্রশ্ন করলেন -  মহারাজ, সমাজ সংস্কার কিভাবে করা যায়? কোন কাজ শুরু করার আগে কি সংকল্প নিয়ে করবো?


মহারাজ: যেটুকু আমরা বুঝতে পারি বা বোঝার চেষ্টা করি, তারই ফল স্বরূপ ভিতর থেকে যেটুকু বেরিয়ে আসে.. সেটাই হলো সংস্কার। নিজেকে সংস্কারিত করতে করতে আপনি যে পথে এগিয়ে যাবেন... সেই পথেই সমাজ সংস্কার ঘটে যাবে। সংকল্পিত সমাজ সংস্কার হয় না। সংকল্প থাকলেই একটা person থাকবে, তখনই তার একটা individual মতামত চলে আসবে। সেটা সমাজ সংস্কার হতে পারে না।

ব্যক্তিগত স্বার্থের সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে যে কাজ শুরু করা যায়... তাই হলো সমাজ সংস্কার।


ভক্ত  :  সমাজের শুদ্ধিকরণ কিভাবে সম্ভব? 


মহারাজ: নিজের শুদ্ধিকরণ- ই হলো সমাজের শুদ্ধিকরণ। যেমন বাড়িতে একটা পরিষ্কার স্বচ্ছ আয়না থাকলে তার উপর প্রতিফলিত সব প্রতিবিম্বই স্বচ্ছ ও পরিষ্কার মনে হয়। সেইরকম আপনি যখন নিজের গভীরে প্রবেশ করে ব্যক্তিস্বত্তা কে বুঝতে শুরু করেন, তখনই আপনার শুদ্ধিকরণ ঘটে। 

যত নিজের চেতনা ও বোধের উন্নতি হয় ততই সমাজের সমস্যার মূল বা গোড়াটা আমরা বুঝতে পারি। কোনো নিদিষ্ট বাছাই করা কর্মের মাধ্যমে সমাজের উন্নতি ঘটে না। নিজেকে শোধন করার ফলই হলো অন্যের শুদ্ধিকরণের উপায়। তাই নিজেকে ঘষে মেজে এতটাই পরিষ্কার করতে হবে যেন ব্যক্তিসত্তার বিনাশ হয়। তখনই একমাত্র সমাজ সংস্কার করা সম্ভব।



নিজের কিছুমাত্র বেঁচে থাকলে ব্যক্তিকে পিছিয়ে পড়তে হবে, সমাজ সেবা বিকৃত হবে, ভ্রষ্টাচার হবে। তাই এটাই স্বীকারোক্তি হওয়া উচিত -- " ব্যক্তি হিসাবে আমি অতি নীচ, অতি হীন। একে আর এগিয়ে নিয়ে যাবো না।" এটাকেই বলে  'Impersonal life living'.


আর এটাই হলো প্রকৃত সমাজ সংস্কার।