তখন আমি আর মহারাজ হৃষিকেশ -এ morning walk এ একটু তাড়াতাড়িই বেরিয়ে পড়েছি। একে তো সূর্য ওঠেনি তার উপর পাহাড়ি এলাকার কুয়াশা, কিছু দেখা যাচ্ছে না।
আমি বললাম - মহারাজ এই অবস্থায় হাঁটা-ই যাবে না, আপনি দৌড়াবেন বলছেন?
মহারাজ - কিছু হবে না, চল না শুরু তো করি।
অগত্যা দৌড়াতে শুরু করলাম। কিন্তু একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম আমরা যত এগোচ্ছি ততই যেন কুয়াশা সরে যাচ্ছে।আর যেন আমাদেরকেই পথ করে দিচ্ছে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। জানতাম মহারাজ কিছু বলবেন, তাই হলো।
মহারাজ ( দৌড়াতে দৌড়াতেই) : দেখলি যত এগোচ্ছিস ততই যেন কুয়াশা কেটে যাচ্ছে! আধ্যাত্মিকতাও ঠিক এরকমই। যত এগোতে থাকবি ততই দেখবি সংশয় দূর হচ্ছে। তার আগে পর্যন্ত যত চিন্তা উঠবে - যে সবাই চাকরি করছে, আমি করছি না। সবাই ভবিষ্যত নিয়ে ভাবছে আর আমি আশ্রমে পড়ে আছি etc. একটু তলিয়ে দেখলে বোঝা যাবে এই চিন্তাগুলো কুয়াশার মত, তোর চিন্তা এগুলো নয়।
শ্রীকৃষ্ণ কি বলেছেন মনে আছে তো?
আর ভালো করে দেখ কুয়াশা কাটছে না কিন্তু!! তুই এগাসনি বলে,মনে হচ্ছিলো কুয়াশাতে এগানো যাবে না।ওটা ভ্রম ছিল।এই পিছনে দেখ!আবার মনে হচ্ছে না যে,কুয়াশা ঘন? আসল ব্যাপার কি তবে?যত এগাবি,ততই জীবনের পথ সহজ হবে।যার কঠিন লাগছে,সে কোথাও দাঁড়িয়ে গেছে,আর কল্পনা করছে।আর যাকে গুরু বলে,তার কাজ কি? stimulate করা।তার কথায় এগালে যে সমস্যা কাঁচা মনে সমস্যা মনে হচ্ছে,তা পরিস্কার হয়ে যায়।এটুকুই গুরুর কাজ।
আর একটা জিনিস লক্ষ্য কর, এখন আমরা দুজনেই শুধু রাস্তায়, আর কাউকে দেখতে পাচ্ছিস? এই ভয় - ই তোর মধ্যেও উঠছে। এখন যদি এখানে আরো লোক থাকত তাহলে কোন চিন্তা তোর উঠতো না। আর যে বুঝেছে, এই চিন্তা শুধু উঠছে, উঠবে, এ কারোর ব্যক্তিগত নয়, সে জ্ঞানী। আর জ্ঞানীকে কে রুটিনে বাঁধবে?
তাই শ্রীকৃষ্ণ বলছেন -
- " যা নিশা সর্বভূতানাং তস্যাং জাগর্তি সংযমী..."
যখন সারা জগৎ ঘুমায় জ্ঞানী তখন জেগে থাকে।