মায়ের তিথিপূজার দিন দুপুরবেলা পূজার কাজ সেরে একটু বিশ্রাম নিতে রুমে এলাম। হঠাৎ একটা পূজার অংশ মনে এলো তা নিয়ে মহারাজকে জিজ্ঞাসা করতে গেলাম। কথা চলতে চলতে ক্রমে তিনি, স্বামী বিবেকানন্দ কিভাবে বেলুড় মঠে rules, regulations, Trust গঠন ইত্যাদির পাশাপাশি জীবন বাঁচাকে balance করেছিলেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করলেন।
আমি বললাম, স্বামীজির মঠে যে rules and regulations এর অংশটি, তার বেশীরভাগেরই কিন্তু তৎকালীন British-দের তৈরি আইন গুলিতে ছোঁয়া পাই। তবে তো এই idea গুলো সব ইংরেজদের, তাহলে কিভাবে বিষয়টা স্বামীজি করলেন?
তিনি :- দেখ সে সময়ের প্রেক্ষাপটটা ভাব! - ঘণ্টা নাড়া, ছোঁয়াছুয়ির ভারতে থেকে ব্রিটিশদের সংগঠিতভাব ও ভারতের আধ্যাত্মিক গহন দৃষ্টিকোণের উন্নত দিকগুলি নিয়ে একটা সমন্বয় সাধন করেছিলেন, তা অতি দুঃসাহসিক পদক্ষেপ। কি বলিস?
আমি :- হ্যাঁ! সে তো অবশ্যই একদল বলছে ইংরেজ মানেই খারাপ, অন্যদল সাহেব সাজতে পছন্দ করছেন। এই অবস্থায় ভারতের বেদান্ত ও ইংরেজদের Technicality নিয়ে এক সাম্যাবস্থায় আসার চেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়।
তিনি :- এমন প্রায় সব মহাপুরুষই চেষ্টা করেছেন, তারা সাময়িক একটা মেলবন্ধনের প্রয়াস করলেও পরে যেন তা টিকতে পারেনি। দেখ না, স্বামীজি বেঁচে থাকতেই মঠে corruption ঢুকে পড়ে, গুরুভাইদের মধ্যে মন কষাকষি চলতে থাকে। ব্রহ্মভাব যেন শক্তির সংসারে বেশীক্ষণ টেকে না। "ধরি ধরি মনে করি.." তাই তো মহাপুরুষেরা মা, মা ( শক্তি)বলতে পাগল। কারণ, তারা ভালো করে জানেন যত বড় ব্রহ্মজ্ঞানীই হোক না কেন, থাকতে হবে শক্তির সীমানাতেই। তাই মাকে সন্তুষ্ট না করলে যেন চলবেই না।
আমি :-- হুঁ! সে জন্যই আমার মনে হয় মাকে এড়িয়ে কিছু করা উচিত নয়। এড়িয়ে গেলেও বা এড়ানোর চেষ্টা করলেও বিপদ।
তিনি :- যে এড়িয়ে যাচ্ছে বা চেষ্টা করছে সেগুলো মা নিজে চাইছেন বলে হচ্ছে। আদপে ব্যক্তি বা একটা unit এর কোনও ক্ষমতা নেই।
আচার্য্য শংকর অতো বড়ো ব্রহ্মজ্ঞানী, কিন্তু তাকেও শেষ পর্যন্ত নারীসঙ্গ করতে হল। আবার তার সময়ে গোটা ভারতে এক ধর্ম সংস্কারের ঢেউ উঠেছিল কিন্তু পরক্ষণেই সব smash. দুই-ই মায়ের ইচ্ছা।তিনিই so called সমাজের উন্নয়ন করবেন,আবার তিনিই অবনতি ঘটাবেন। এই যে, internet,mobile এত প্রসার হলো আবার Hackers এসে গেল। জীবন বা মা যেন বৈপরীত্যে খেলতে চায়।কিছুই বেশীক্ষণ দাঁড়াবে না।
তিনিই "আমি" হয়ে তোর সাথে কথা বলছেন।তুই বুঝলেও তিনিই চেয়েছেন,না বুঝলেও তিনিই চাইলেন।আমি যা কিছুই মনে করছি,আসলে I'm appointed to think like that.কিন্তু,ব্যক্তির মনে হবে,"আমি ভাবলাম্।" আর ঐ "আমি" ভাবটাও তিনিই রেখেছেন।
যদি উত্তর জানতে চাওয়া হয় যে কেন এরকম করছেন, মা বলবেন- আমার ইচ্ছা আমি এমন চাই।
একজন গুরুর নাম করে বললেন, দেখ না ওনার ভাবটা - "দুনিয়াতে সব ঘটছে,কিন্তু তুমি কর্তা নও"।কত সুন্দর,উঁচু কথা।
এটাও কিন্তু,মা চান যে উনি এটাই করুন এবং দুনিয়ার সবাইকে বলে বেড়ান -- "তোমরা সকলে অকর্তা।"যেন মা বলে দিয়েছেন," তোর কাজই হলো,সকলকে বসে বসে "তুমি অকর্তা"- এটা শোনাও।
আমি এবং তিনি একসাথে হো হো করে হেসে উঠলাম।
মা already কাউকে না কাউকে কর্তা বানিয়ে রেখেছেন এটা বলার জন্য যে আমরা সকলে অকর্তা।
এবার তিনি আমায় একটা গান শোনালেন - "ইচ্ছাময়ী তারা তোর ইচ্ছা কে বুঝিতে পারে?..."